পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ১৮তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের উপর পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সংবাদ সম্মেলন
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ১৮তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন।
আপনারা জানেন যে, বাংলাদেশ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে ২ ডিসেম্বর ১৯৯৭ তারিখে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের পর দীর্ঘ ১৮ বছর অতিক্রান্ত হতে চলছে। সরকার দাবি করছে যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি ধারা ইতিমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। বস্তুত ৭২টি ধারার মধ্যে মাত্র
২৫টি ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে। তার অর্থ হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির দুই-তৃতীয়াংশ ধারা এখনো অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে। আর সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হচ্ছে চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক অধিকার সংক্রান্ত, ভূমি ও অর্থনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত, ‘অপারেশন উত্তরণ’সহ অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার, পুনর্বাসন ইত্যাদি চুক্তির মৌলিক বিষয়সমূহ অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে। চুক্তির মৌলিক বিষয়সমূহ বাস্তবায়িত না হওয়ার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্বলিত বিশেষ শাসনব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। ফলশ্রুতিতে এতদাঞ্চলের গণমানুষের শাসনতান্ত্রিক অংশীদারিত্ব নিশ্চিত হয়নি। অর্জিত হয়নি পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধান।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মৌলিক বিষয়সমূহের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় অধ্যুষিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ; পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের আওতাধীন বিষয় ও কার্যাবলী হস্তান্তর ও কার্যকরকরণ এবং এসব পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিতকরণ; পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০০১-এর বিরোধাত্মক ধারা সংশোধন পূর্বক পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তিকরণ; আভ্যন্তরীণ জুম্ম উদ্বাস্তু ও প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থীদের জায়গা-জমি প্রত্যর্পণ ও তাদের স্ব স্ব জায়গা-জমিতে পুনর্বাসন; সেনা শাসন ‘অপারেশন উত্তরণ’সহ সকল অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার; অস্থানীয়দের নিকট প্রদত্ত ভূমি ইজারা বাতিলকরণ; পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল চাকরিতে জুম্মদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তিন পার্বত্য জেলার স্থায়ী অধিবাসীদের নিয়োগ; চুক্তির সাথে সামঞ্জস্য বিধানের জন্য ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ও বাংলাদেশ পুলিশ আইনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ সংশোধন; সেটেলার বাঙালিদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সম্মানজনকভাবে পুনর্বাসন ইত্যাদি বিষয়গুলো বাস্তবায়নে সরকার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
মহাজোট সরকারের পূর্ববর্তী মেয়াদে (২০০৯-২০১৩) চুক্তির পূর্বে হস্তান্তরিত বিষয়/বিভাগের অধীন ৭টি কর্ম এবং বর্তমান মেয়াদে ২০১৪ সালে জুম চাষ, মাধ্যমিক শিক্ষা, জন্ম-মৃত্যু ও অন্যান্য পরিসংখ্যান, মহাজনী কারবার ও পর্যটন (স্থানীয়)- এই পাঁচটি বিষয় তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত হয়েছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য বিষয়সমূহ যেমন- জেলার আইন-শৃঙ্খলা তত্ত্বাবধান, সংরক্ষণ ও উহার উন্নতি সাধন; ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা; পুলিশ (স্থানীয়); সরকার কর্তৃক রক্ষিত নয় এই প্রকার বন সম্পদ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ; পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন; পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতীত ইম্প্রুভমেন্ট ট্রাস্ট ও অন্যান্য স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান; মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়সমূহ এখনো হস্তান্তর করা হয়নি। আরো উল্লেখ্য যে, যেসব বিষয় বা কর্ম/প্রতিষ্ঠান হস্তান্তরিত হয়েছে সেগুলোও ত্রুটিপূর্ণভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। যেমন- গত ২৮ আগস্ট ২০১৪ পর্যটন (স্থানীয়) বিষয়টি পর্যটন মন্ত্রণালয় ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের মধ্যকার চুক্তির মাধ্যমে হস্তান্তরিত হয়েছে। কিন্তু পর্যটন বিষয়টি যথাযথভাবে হস্তান্তরিত হয়নি। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যাপারে পার্বত্য জেলা পরিষদের এখতিয়ার সীমিত রেখে পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ পর্যটন কর্পোরেশন, স্থানীয় সরকারি কর্তৃপক্ষ ও প্রাইভেট সেক্টর নিজস্বভাবে কমার্শিয়াল পর্যটন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে যা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পর্যটন সংক্রান্ত বিধানের বরখেলাপ হিসেবে বিবেচনা করা যায়।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের কার্যকর ও দৃশ্যমান উদ্যোগ না নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ‘চুক্তি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে’ বা ‘চুক্তি বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিক’, ‘৮০% চুক্তি বাস্তবায়িত হয়েছে’, কখনো বা ‘এ সরকারের আমলে ৯০% চুক্তি বাস্তবায়ন করা হবে’ ইত্যাদি বুলি আওড়িয়ে জনমতকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অবাস্তবায়িত বিষয়গুলো বাস্তবায়নে সরকার চরম উদাসীনতা ও নির্লিপ্ততা প্রদর্শন করে চলেছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে বলে বলা যায়।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার অন্যতম দিক হলো পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি সমস্যা। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি মোতাবেক এ সমস্যা নিরসনে প্রধান বাধা হয়ে রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০০১-এর বিরোধাত্মক ধারা সংশোধন না করা। এ সমস্যা দূরীকরণে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিনিধি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের মধ্যে ৯ জানুয়ারি ২০১৫ চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০০১ এর ১৩-দফা সংশোধনী প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। উক্ত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ২০ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে জাতীয় সংসদের উপ-নেতা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির সভায় এবং এরপর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ রাঙ্গামাটিতে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায়ও ১৩-দফা সংশোধনী প্রস্তাব অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০০১ এর সংশোধনের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। উক্ত সভাগুলোতে উক্ত আইনের সংশোধনী বিল জাতীয় সংসদের তৎসময়ে চলমান শীতকালীন অধিবেশনে উত্থাপনেরও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শেষ হওয়ার পর বাজেট অধিবেশনসহ জাতীয় সংসদের কয়েকটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়ে গেলেও এখনো আইনটি সংশোধিত হয়নি। বার বার ঐক্যমত্য হওয়া সত্ত্বেও পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি নিষ্পত্তি কমিশন আইনটি সংশোধনে বছরের পর বছর ধরে অব্যাহত গড়িমসি চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তরিকতার অভাবের বহি:প্রকাশ বলে নির্দ্বিধায় বলা যায়।
আরো উল্লেখ্য যে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ জাতীয় সংসদ ভবনের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতির মধ্যকার অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জনসংহতি সমিতির সভাপতির পক্ষ থেকে গত ১ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে “পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যেসব বিষয় বাস্তবায়িত হয়নি তার বিবরণ” সম্বলিত ১৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন এবং তৎসঙ্গে সহায়ক দলিল হিসেবে ১৬টি পরিশিষ্ট সংযুক্ত করে প্রধানমন্ত্রীর নিকট জমা দেয়া হয়। কিন্তু এ বিষয়ে আজ অবধি কোন অগ্রগতি সাধিত হয়নি।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, সরকার একদিকে চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বছরের পর বছর ধরে অবাস্তবায়িত অবস্থায় রেখে দিয়েছে, অন্যদিকে চুক্তি বাস্তবায়নের দোহাই দিয়ে চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম-স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম অব্যাহতভাবে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে একতরফাভাবে ২০১৪ সালে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন সংশোধন করে অন্তর্বর্তী তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য-সংখ্যা পাঁচ থেকে ১৫ জনে বৃদ্ধি করে অগণতান্ত্রিক ও দলীয়করণের ধারা আরো জোরদার করা হয়েছে। এভাবে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহকে চুক্তি বিরোধী ও দুর্নীতির কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে।
বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ শিক্ষাকে বেহাল অবস্থায় রেখে, জুম্ম জনগণের অধিকার ও অস্তিত্বকে বিপন্ন করে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিয়ে, সর্বোপরি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ বন্ধ রেখে সরকার উন্নয়নের নামে রাঙ্গামাটিতে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি মেডিকেল কলেজের কাজ বাস্তবায়ন করে চলেছে যা পার্বত্যবাসী গোড়া থেকেই বিরোধিতা করে আসছে। সার্বক্ষণিক সেনা ও পুলিশ প্রহরাধীনে এসব বিতর্কিত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নেয়া হচ্ছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা হচ্ছে। ব্যাপক জনমতের বিপরীতে এভাবে বিতর্কিত রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম শুরু করার ফল কখনোই শুভ হতে পারে না।
চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণভাবে নস্যাৎ করার লক্ষ্যে সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী ও উগ্র জাতীয়তাবাদী শক্তি তিন পার্বত্য জেলায় সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী জঙ্গী তৎপরতা জোরদার করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে পশ্চাদভূমি হিসেবে ব্যবহার করে সারাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক জঙ্গী তৎপরতা বিস্তৃত করে চলেছে। সাম্প্রদায়িক জিগির তুলে জুম্মদের উপর একের পর এক সাম্প্রদায়িক হামলা সংঘটিত করে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ ১৭ অক্টোবর ২০১৫ রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজে জুম্ম ছাত্র-জনতার উপর হামলা এবং ১৪ নভেম্বর ২০১৫ লংগদু উপজেলার গুলশাখালী এলাকায় বিরতিহীন লঞ্চের জুম্ম যাত্রীদের উপর হামলাসহ এ সরকারের আমলে অন্তত ১০টি সাম্প্রদায়িক হামলা সংঘটিত হয়েছে। জুম্মদের প্রথাগত ভূমি অধিকারকে পদদলিত করে জুম্মদের মৌজা ও জুম ভূমির উপর সেনাবাহিনীর কর্তৃত্বে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। বহিরাগত প্রভাবশালীদের কাছে শত শত একর ভূমি ইজারা প্রদান করে এবং পদ্ধতি-বহির্ভুতভাবে রিজার্ভ ফরেষ্ট ঘোষণা করে জুম্মদেরকে তাদের গ্রাম থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। গত মে মাসে এ ধরনের ভূমি জবরদখল সংক্রান্ত এক ঘটনায় ভূমি বেদখলকারী বহিরাগতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে পুলিশ লামার রূপসী পুরাতন পাড়ার প্রতিবাদকারী গ্রামের কার্বারীকে গ্রেফতার করেছে। গত অক্টোবরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় সেটেলার বাঙালিরা নানিয়ারচরের পলিপাড়ার দুইজন জুম্ম গ্রামবাসীর প্রায় ১৯ একর রেকর্ডীয় জমি জবরদখল করেছে। চলতি নভেম্বর মাসে মহালছড়ির ক্যায়াংঘাট মৌজার করল্যাছড়িতে সেটেলার বাঙালিরা জুম্মদের জায়গা-জমি দখল করে ৮টি বাড়ি নির্মাণের চেষ্টা করেছে।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, দেশে-বিদেশে প্রবল প্রতিবাদ সত্ত্বেও সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদেশীদের ভ্রমণে ও জুম্মদের সাথে বিদেশী/দেশীয় সংস্থার লোকজনের সাক্ষাতে বিধি-নিষেধ আরোপ, পাহাড়ি পুলিশ সদস্যদের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সমতল অঞ্চলে বদলি, সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার সমন্বয় সাধনের দায়িত্ব প্রদানসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী ও বর্ণবাদী নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনীর তল্লাসী অভিযান, ধরপাকড়, আটক, রাজনৈতিক হয়রানি ইত্যাদি জোরদার করা হয়েছে। আগস্ট মাসে বিলাইছড়ি উপজেলায় জনসংহতি সমিতির ৮ জন সদস্যকে আটক করে বড়থলি ক্যাম্পের কম্যান্ডার কর্তৃক বেদম মারধর করা এবং অক্টোবরে তিন পর্যটককে অপহরণের ঘটনায় মিথ্যাভাবে জড়িত করে রুমা জোনের সেনাসদস্যরা বড়থলি ইউনিয়নের মেম্বার ও কার্বারীসহ ৭ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে ক্যাম্পে ডেকে এনে শারীরিক নির্যাতন করত: তাদেরকে জেলে প্রেরণ ইত্যাদি ঘটনা হচ্ছে সর্বশেষ ঘটনা। এছাড়া কাপ্তাই উপজেলায় বন বিভাগের কর্মীদের গুলিতে এক নিরীহ জুম্ম নিহত ও অন্য একজন গুরুতর আহত হয়েছে।
এছাড়া সারাদেশে আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের ভূমি জবরদখল ও তাদের চিরায়ত ভূমি থেকে উচ্ছেদ করার হীন উদ্দেশ্যে আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলা, হত্যা, নারী ধর্ষণ ও অপহরণসহ নৃশংস সহিংসতা, নিপীড়ন-নির্যাতন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে আদিবাসী নারী ও শিশুর উপর সহিংসতার মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত আদিবাসী নারী ও শিশুর উপর ৫৫টি সহিংস ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে যেখানে পার্বত্য চট্টগ্রামে ৩৬ জন এবং সমতল অঞ্চলে ৩৩ জন মোট ৬৯ জন আদিবাসী নারী ও শিশু সহিংসতা ও অপহরণের শিকার হয়েছে। আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের ভূমি জবরদখলে ক্ষমতাসীন অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ার ফলে আজ পার্বত্য চট্টগ্রামের সামগ্রিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের পরিবর্তে নি¤েœাক্ত চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম-স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে-
১. পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম অধ্যুষিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণের পরিবর্তে পার্বত্য চট্টগ্রামকে মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে পরিণত করার ষড়যন্ত্র জোরদার করা হয়েছে;
২. আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্বলিত বিশেষ শাসনব্যবস্থা কার্যকরকরণের পরিবর্তে ‘অপারেশন উত্তরণ’-এর নামে একপ্রকার সেনা শাসন ও কর্তৃত্ব জারি রয়েছে এবং আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে অথর্ব করে রাখা হয়েছে;
৩. জুম্মদের বেহাত হওয়া জায়গা-জমি প্রত্যর্পণের পরিবর্তে জুম্মদের জায়গা-জমি জবরদখল ও তাদের চিরায়ত ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে;
৪. উন্নয়নের নামে তথা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের দোহাই দিয়ে রাঙ্গামাটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ স্থাপন, পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন, রিজার্ভ ফরেষ্ট ঘোষণা, নতুন ক্যাম্প স্থাপন, ভূমি ইজারা প্রদান ইত্যাদি জুম্ম-স্বার্থ বিরোধী কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে;
৫. সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী গোষ্ঠী এবং উগ্র জাতীয়তবাদী শক্তিকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মদদ দিয়ে এবং জুম্মদের মধ্যে তাবেদার গোষ্ঠী সৃষ্টি করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে;
৬. সাম্প্রদায়িক হামলা, উচ্ছেদ, হত্যা, নারী ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যা, অপহরণ, রাজনৈতিক হয়রানি, ধরপাকড়, সেনা অভিযান ও তল্লাসী, বহিরাগত অনুপ্রবেশ ইত্যাদির ফলে জুম্ম জনগণকে এক নিরাপত্তাহীন ও অনিশ্চিত জীবন অতিবাহিত করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ১৭তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে গত ২৯ নভেম্বর ২০১৪ ঢাকায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির ঘোষণা অনুসারে ১লা মে ২০১৫ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেয়া এবং সরকারের চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম-স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম প্রতিরোধ ও প্রতিবিধান করার লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক উপায়ে জুম্ম জনগণের অসহযোগ আন্দোলন চলছে। ইতোমধ্যে চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, হাট-বাজার বর্জন, কালো পতাকা মিছিল, ক্লাস বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘট, ছাত্র-যুব সমাবেশ, প্রতীকী অনশন ধর্মঘট, অফিস-আদালত বর্জন, স্মারকলিপি প্রদান, মেডিকেল কলেজ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সমাবেশ ইত্যাদি কর্মসূচি আপামর জনগণের স্বত:স্ফূর্ত সমর্থনে ও অংশগ্রহণে সফলভাবে পালিত হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সরকার চরম ফ্যাসীবাদী ভূমিকা নিয়ে চুক্তি বাস্তবায়নে অব্যাহতভাবে নির্লিপ্ততা প্রদর্শন করে চলেছে। অধিকন্তু সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম-স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম অব্যাহত রেখে জুম্ম জনগণকে জাতিগতভাবে নির্মূলীকরণের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করে চলেছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না যে, প্রত্যেক জাতির মতো জুম্ম জাতিও কোনদিন তাদের জাতীয় অস্তিত্বের ধ্বংস চায় না। তারা তাদের চিরায়ত ভূমি ও ভূখ- থেকে উচ্ছেদ ও বিতাড়িত হতে চায় না। তারা তাদের চিরায়ত আবাসভূমিতে স্বকীয় জাতীয় পরিচয়, মৌলিক অধিকার ও আত্মমর্যাদা নিয়ে মাথা উচুঁ করে এদেশের গর্বিত নাগরিক হিসেবে বেঁচে থাকতে চায়। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে জুম্ম জাতি এদেশের নাগরিক হিসেবে স্বকীয়তা ও স্বাতন্ত্র্যতা নিয়ে বেঁচে থাকার পুনরায় অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছে। সেই ঐতিহাসিক চুক্তি বাস্তবায়নে গড়িমসি করে, সর্বোপরি জুম্ম-স্বার্থ পরিপন্থী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করে জুম্ম জাতিকে ধ্বংস করার শাসকগোষ্ঠীর অপচেষ্টা কখনোই শুভ হতে পারে না।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম-স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে জুম্ম জনগণের প্রতিরোধ আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য সরকার প্রশাসনিক ক্ষমতা এবং নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শক্তি ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি করে চলেছে। ইহা উল্লেখ্য যে, জুম্ম জনগণের বঞ্চনা ও আশা-আকাক্সক্ষার প্রতি কোনরূপ তোয়াক্কা না করে, সর্বোপরি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের পরিবর্তে সরকার যদি রাষ্ট্রযন্ত্র ও অস্ত্র শক্তি ব্যবহার করে জুম্ম জনগণের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমনপীড়ন করতে থাকে, তাহলে জুম্ম জনগণের পেছনে ফেরার কোন গত্যন্তর থাকবে না। জুম্ম জনগণ আরো কঠোর ও কঠিন কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হবে। বলা বাহুল্য, জুম্ম জনগণ তাদের জাতীয় অস্তিত্ব ও আবাসভূমির অস্তিত্ব সংরক্ষণের স্বার্থে আত্মবলিদানে ভীত না হয়ে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে বদ্ধপরিকর। তজ্জন্য যে কোন অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির জন্য সরকার তথা শাসকগোষ্ঠীই দায়ী থাকবে। জনসংহতি সমিতি আশা করে, সরকার তথা দেশের শাসকগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামের এই বাস্তবতাকে সম্যকভাবে অনুধাবনে রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দেবেন।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা একটি জাতীয় ও রাজনৈতিক সমস্যা। বস্তুত দেশের সামগ্রিক স্বার্থেই পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যাকে রাজনৈতিক ও জাতীয়ভাবে সমাধানের লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে অনতিবিলম্বে এ চুক্তি বাস্তবায়ন অপরিহার্য। কিন্তু সরকার চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রেখেছে। এমতাবস্থায় রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনের সাথে কেবল ঐক্য ও সংহতি প্রকাশের মধ্যে সীমিত না থেকে দেশের গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও সমাজের পক্ষ থেকে নিজস্ব কার্যক্রম গ্রহণের অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য। তাই জাতীয় পর্যায়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন গড়ে তুলতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি তাদের কাছে আবেদন রাখছে। এবং দেশের বৃহত্তর স্বার্থে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছে যে-
১. পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অচিরেই সময়সূচি-ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।
২. আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের সকল বিষয় ও কার্যাবলী কার্যকরকরণ, অপারেশন উত্তরণসহ সকল অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধন পূর্বক ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তিকরণ, জুম্ম শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তদের যথাযথ পুনর্বাসন, ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ও বাংলাদেশ পুলিশ আইন এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সকল অবাস্তবায়িত বিষয়াদি দ্রুত বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
৩. পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম অধ্যুষিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণের জন্য আইনী ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
৪. সেটেলার বাঙালিদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সম্মানজনকভাবে পুনর্বাসন করুন।
৫. পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম-স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম অচিরেই বন্ধ করুন।
৬. পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম স্থগিত করুন এবং এসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে ভর্তির পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, আপনারা নিশ্চয় ইতিমধ্যে অবগত হয়েছেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে চলমান অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ১৮তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির উদ্যোগে ২ ডিসেম্বর ২০১৫, রোজ বুধবার, সকাল ১০:০০ ঘটিকায় রাঙ্গামাটি জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণে এক বিরাট গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত গণসমাবেশে জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও নাগরিক সমাজের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য রাখবেন। উক্ত সমাবেশে জনসংহতি সমিতির চলমান অসহযোগ আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন স্থানে জনসংহতি সমিতি ও নাগরিক সমাজের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। আপনাদের মাধ্যমে পার্বত্যবাসীসহ দেশবাসীকে সেসব কর্মসূচিতে সামিল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
আপনাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
(জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা)
সভাপতি
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি
২৮ নভেম্বর ২০১৫, শনিবার, সকাল ১১টা, হোটেল সুন্দরবন, ঢাকা
No comments:
Post a Comment