স্টাফ রিপোর্টার : তিন পার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা নির্ধারণী সার্টিফিকেট কে দেবেন তা নির্ধারণে ৭ জানুয়ারি ২০১৬ বৃহস্পতিবার আইন মন্ত্রণালয়ের আহ্বানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক আহবান করা হয়েছে।
গত ২০ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ে এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে ১৭ ডিসেম্বর বৈঠকটি স্থগিত করা হয়। গত ২৭ ডিসেম্বর বৈঠকটি পুণরায় আহ্বান করা হয়।
জানা গেছে, গত ২৭ ডিসেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ের লিজিসলেটিভ বিভাগ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে পার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা সনদপত্র প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ বিষয়ক একটি মতবিনিময় সভা ৭ জানুয়ারী তারিখ দিয়ে আহ্বান করে।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান নুর স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে পার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা সনদপত্র প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ কে হবেন তা সে বিষয়ে মতামত প্রদানের জন্য লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগকে অনুরোধ করেছে। উক্ত বিষয়ে Chittagong Hill Tracts Mannual- 1900, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন, ১৯৮৯, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন, ১৯৮৯ এবং বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন, ১৯৮৯-সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইনে বর্ণিত আইনগত অবস্থা পর্যালোচনাক্রমেপার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা সনদ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ নির্ধারণের নিমিত বৃহস্পতিবার এই বৈঠক আহ্বান করা হয়।
সংসদ ও লেজিসলেটিভ বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে এই বৈঠকে উপস্থিত হওয়ার জন্য মন্ত্রী পরিষদ সচিব, আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান, জন প্রশাসন সচিব, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, তিন পার্বত্য জেলা প্রশাসক প্রমুখদের পত্র পাঠানো হয়।
মিটিং এ অংশগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে তিন পার্বত্য জেলা থেকে অংশগ্রহণকারীরা রাজধানীতে এসে অবস্থান করছেন।
এদিকে আইনে মিমংসিত একটি বিষয় নিয়ে হঠাৎ করে রিভিউয়ের মিটিং ডাকার বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো নড়ে চড়ে বসে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংশ্লিষ্ট মহল ও সরকারী গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর উর্দ্ধতন পর্যায়ে বিষয়টি আলোচিত হয়। এই বিষয়টি নিয়ে তিন পার্বত্য জেলার বাঙালিদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক। স্থায়ী বাসিন্দা সনদ দেয়ার একমাত্র কর্তৃত্ব সার্কেল চীফদের হাতে দেয়ার জন্য এ তৎপরতা শুরু হয়েছে মনে করাই- এই আতঙ্কের কারণ।
পার্বত্যনিউজে এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত লেখা প্রকাশিত হয়েছে।
উল্লেখ্য আইন মন্ত্রণালয় থেকে ২০০২ সালের ২১ অক্টোবর জারি করা এক প্রজ্ঞাপনের দ্বিতীয় প্যারাগ্রাফে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে,‘তিন পার্বত্য জেলার অধিবাসীদের স্থায়ী বাসিন্দার সনদ কোন কর্তৃপক্ষ প্রদান করবেন সে বিষয়ে পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯ ও উহার সংশোধনীতে (১৯৯৮ সালে জারীকৃত) কোন বিধান করা হয়নি। পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন, ১৯৮৯ এর ধারা ৪ এর উপধারা (৫) ও (৬) এ পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে নির্বাচনে প্রার্থীতার ক্ষেত্রে কোন প্রার্থী উপজাতি বা অ-উপজাতি কিনা সে বিষয়ে প্রত্যয়নের ক্ষমতা সার্কেল চীফগণকে প্রদান করা হয়েছে। আলোচ্য আইনে বা আইনের ৪ ধারার (৫) ও (৬) উপধারায় চাকুরীক্ষেত্রসহ অন্যান্য প্রয়োজনে সার্কেল চীফগণ স্থায়ী বাসিন্দার সনদপত্র প্রদান করতে পারবেন মর্মে কোন বিধান দেয়া হয়নি। এ উপধারা দুটির বিধাান এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত স্পষ্ট। এছাড়াও বর্ণিত আইনে নির্বাচন ব্যতীত অন্যান্য প্রয়োজনে স্থায়ী বাসিন্দার সনদ প্রদানের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের ক্ষমতা রদ করা হয়নি।’
অন্যদিকে ব্রিটিশ আমলে প্রণীত চিটাগাং হিল ট্রাক্টস রেগুলেশন ১৯০০ কে বাংলাদেশের সংবিধানে আত্মীকরণ করা হয়নি। পার্বত্য জেলা পরিষদ সমূহ আইন ১৯৮৯ এ চিটাগাং হিল ট্রাক্টস রেগুলেশন ১৯০০ কে রহিত করা হয়েছে। তাছাড়া হাইকোর্টের এক রায়েও এই রেগুলেশনকে ডেড ল’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। সেই ঘোষণা আপিলেট ডিভিশনে স্থগিতাবস্থায় বিচারাধীন রয়েছে। সাব জুডিস একটি আইনকে বিবেচনায় কেন আনা হলো তা সংশ্লিষ্টদের বোধগম্য নয়।
অন্যদিকে রেওয়াজ অনুয়ায়ী আইনী মতামত চেয়ে কোনো আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে আসলে আইন মন্ত্রণালয় তা দিয়ে থাকে। প্রয়োজনে তারা সলিসিটরের মতামত নেন। তিনিও যথেষ্ট মতামত দিতে না পারলে এটর্নি জেনারেলের মতামত নেয়া হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয় রেওয়াজ ভেঙ্গে কেন আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক ডাকলেন তা এক বিরাট প্রশ্ন?
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতামত নেয়ার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগের সচিব মো, শহিদুল হকের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
উৎস : পার্বত্যনিউজ, প্রকাশ সময় January 6, 2016, 10:41 PM
গত ২০ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ে এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে ১৭ ডিসেম্বর বৈঠকটি স্থগিত করা হয়। গত ২৭ ডিসেম্বর বৈঠকটি পুণরায় আহ্বান করা হয়।
জানা গেছে, গত ২৭ ডিসেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ের লিজিসলেটিভ বিভাগ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে পার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা সনদপত্র প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ বিষয়ক একটি মতবিনিময় সভা ৭ জানুয়ারী তারিখ দিয়ে আহ্বান করে।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান নুর স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে পার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা সনদপত্র প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ কে হবেন তা সে বিষয়ে মতামত প্রদানের জন্য লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগকে অনুরোধ করেছে। উক্ত বিষয়ে Chittagong Hill Tracts Mannual- 1900, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন, ১৯৮৯, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন, ১৯৮৯ এবং বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন, ১৯৮৯-সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইনে বর্ণিত আইনগত অবস্থা পর্যালোচনাক্রমেপার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা সনদ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ নির্ধারণের নিমিত বৃহস্পতিবার এই বৈঠক আহ্বান করা হয়।
সংসদ ও লেজিসলেটিভ বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে এই বৈঠকে উপস্থিত হওয়ার জন্য মন্ত্রী পরিষদ সচিব, আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান, জন প্রশাসন সচিব, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, তিন পার্বত্য জেলা প্রশাসক প্রমুখদের পত্র পাঠানো হয়।
মিটিং এ অংশগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে তিন পার্বত্য জেলা থেকে অংশগ্রহণকারীরা রাজধানীতে এসে অবস্থান করছেন।
এদিকে আইনে মিমংসিত একটি বিষয় নিয়ে হঠাৎ করে রিভিউয়ের মিটিং ডাকার বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো নড়ে চড়ে বসে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংশ্লিষ্ট মহল ও সরকারী গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর উর্দ্ধতন পর্যায়ে বিষয়টি আলোচিত হয়। এই বিষয়টি নিয়ে তিন পার্বত্য জেলার বাঙালিদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক। স্থায়ী বাসিন্দা সনদ দেয়ার একমাত্র কর্তৃত্ব সার্কেল চীফদের হাতে দেয়ার জন্য এ তৎপরতা শুরু হয়েছে মনে করাই- এই আতঙ্কের কারণ।
পার্বত্যনিউজে এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত লেখা প্রকাশিত হয়েছে।
উল্লেখ্য আইন মন্ত্রণালয় থেকে ২০০২ সালের ২১ অক্টোবর জারি করা এক প্রজ্ঞাপনের দ্বিতীয় প্যারাগ্রাফে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে,‘তিন পার্বত্য জেলার অধিবাসীদের স্থায়ী বাসিন্দার সনদ কোন কর্তৃপক্ষ প্রদান করবেন সে বিষয়ে পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯ ও উহার সংশোধনীতে (১৯৯৮ সালে জারীকৃত) কোন বিধান করা হয়নি। পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন, ১৯৮৯ এর ধারা ৪ এর উপধারা (৫) ও (৬) এ পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে নির্বাচনে প্রার্থীতার ক্ষেত্রে কোন প্রার্থী উপজাতি বা অ-উপজাতি কিনা সে বিষয়ে প্রত্যয়নের ক্ষমতা সার্কেল চীফগণকে প্রদান করা হয়েছে। আলোচ্য আইনে বা আইনের ৪ ধারার (৫) ও (৬) উপধারায় চাকুরীক্ষেত্রসহ অন্যান্য প্রয়োজনে সার্কেল চীফগণ স্থায়ী বাসিন্দার সনদপত্র প্রদান করতে পারবেন মর্মে কোন বিধান দেয়া হয়নি। এ উপধারা দুটির বিধাান এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত স্পষ্ট। এছাড়াও বর্ণিত আইনে নির্বাচন ব্যতীত অন্যান্য প্রয়োজনে স্থায়ী বাসিন্দার সনদ প্রদানের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের ক্ষমতা রদ করা হয়নি।’
অন্যদিকে ব্রিটিশ আমলে প্রণীত চিটাগাং হিল ট্রাক্টস রেগুলেশন ১৯০০ কে বাংলাদেশের সংবিধানে আত্মীকরণ করা হয়নি। পার্বত্য জেলা পরিষদ সমূহ আইন ১৯৮৯ এ চিটাগাং হিল ট্রাক্টস রেগুলেশন ১৯০০ কে রহিত করা হয়েছে। তাছাড়া হাইকোর্টের এক রায়েও এই রেগুলেশনকে ডেড ল’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। সেই ঘোষণা আপিলেট ডিভিশনে স্থগিতাবস্থায় বিচারাধীন রয়েছে। সাব জুডিস একটি আইনকে বিবেচনায় কেন আনা হলো তা সংশ্লিষ্টদের বোধগম্য নয়।
অন্যদিকে রেওয়াজ অনুয়ায়ী আইনী মতামত চেয়ে কোনো আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে আসলে আইন মন্ত্রণালয় তা দিয়ে থাকে। প্রয়োজনে তারা সলিসিটরের মতামত নেন। তিনিও যথেষ্ট মতামত দিতে না পারলে এটর্নি জেনারেলের মতামত নেয়া হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয় রেওয়াজ ভেঙ্গে কেন আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক ডাকলেন তা এক বিরাট প্রশ্ন?
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতামত নেয়ার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগের সচিব মো, শহিদুল হকের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
উৎস : পার্বত্যনিউজ, প্রকাশ সময় January 6, 2016, 10:41 PM
No comments:
Post a Comment