উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য আসামকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবিতে সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম বা উলফার (স্বাধীন) সঙ্গে চীনের সামরিক যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে। এ কারণে ভারতের গোয়েন্দাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
১৩ মে ২০১৬ শুক্রবার উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক যুগশঙ্খ এ খবর দিয়েছে।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্রের বরাতে পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের ইউনান প্রদেশের পশ্চিম প্রান্তের একটি শহর হল রুইলি। ভারতীয় গোয়েন্দাদের নিদ্রা হরণের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে মিয়ানমার-চীন সীমান্তবর্তী এই শহরের এক মহিলা। ‘দাই’ জনগোষ্ঠীর এই মহিলা হলেন ওই দেশের গোয়েন্দা অফিসার। ওই মহিলার সঙ্গে ইতিমধ্যে সম্পর্ক গড়তে সক্ষম হয়েছেন উত্তর-পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা-আই) সামরিক প্রধান পরেশ বড়–য়া। আর এটাই ভারতীয় গোয়েন্দাদের মাথাব্যথার কারণ।
ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক বিশেষ সূত্রের বরাতে পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুইলিতে চীনের গোয়েন্দা অফিসারের মাধ্যমে ওই দেশের রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে সামরিক যোগাযোগ স্থাপনে সক্ষম হয়েছেন পরেশ বড়–য়া। ঘনঘন স্থান পরিবর্তন করলেও পরেশের মূল ঘাঁটি হল পশ্চিম ইউনান প্রদেশের অন্য এক শহর বাউছানের স্থানীয় প্রশাসনিক কেন্দ্র তেংচেং। ইউনান প্রদেশের রাজধানী কুনমিঙে সম্প্রতি চীনের শীর্ষ গোয়েন্দা অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পরেশ বড়–য়া। আর এই বৈঠকের ব্যবস্থা করেছেন ওই মহিলা গোয়েন্দা অফিসার।
চীনের ‘দাই’ জনগোষ্ঠীর লোকরাই আসাম ও অরুণাচলে ‘তাই’ জনগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত। ফলে পরেশের সঙ্গে এই জনগোষ্ঠীর এক মহিলা গোয়েন্দার সম্পর্ক ভারতীয় গোয়েন্দাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
যুগশঙ্খের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার আশঙ্কা, পরেশকে হাতিয়ার করে আসামসহ উত্তর-পূর্ব ভারতে অস্থির বাতাবরণ কায়েমে তৎপর চীন। এমনকী ড্রোন হামলা চালাতে ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করা হয়েছে, এমন ভয়াবহ তথ্যও ভারতীয় গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। মূল ঘাঁটি তেংচেং হলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে ঘনঘন শিবির বদলাচ্ছেন পরেশ। তবে পরেশ বড়–য়ার উত্তর-পূর্ব ভারত ভ্রমণের উড়ো খবরে গুরুত্ব দিতে চাইছে না গোয়েন্দা বিভাগ।
পত্রিকাটির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, আসামের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া পরেশ বরুয়ার সাক্ষাতকার নিয়ে গোয়েন্দা বিভাগের সূত্রটি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। পরেশের সাক্ষাতকার মিয়ানমারে নেওয়া হয়েছে বলে প্রচার করা হলেও তা মানতে নারাজ গোয়েন্দারা। মিয়ানমার-চীন সীমান্তের রুইলি শহরেই উলফার সামরিক প্রধানের সাক্ষাতকার নেওয়া হয়েছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার দৃঢ় বিশ্বাস।
গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে যুগশঙ্খ জানায়, রুইলির রেনমিন রোডের ‘জেড বিজনেস হোটেলে’ নেওয়া হয়েছে পরেশের সাক্ষাতকার। ভারতীয় গোয়েন্দাদের বিভ্রান্ত করতেই মিয়ানমারে সাক্ষাতকার নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। চীনের নাম যাতে জড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়টি মাথায় রেখে ওই দেশের চাপে মিয়ানমারে সাক্ষাতকার নেওয়ার কথা প্রচার করা হয়েছে। এমনটাই ধারণা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার।v
উৎসঃ আমাদের সময়
No comments:
Post a Comment